স্বাভিমান

অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায়



ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাস আজ লোকে লোকারণ্য। তিলধারণের জায়গা নেই। এজলাসের বাইরে অজস্র বলদে টানা গাড়ি বাঁধা। বলদগুলোর গলায় ঝোলানো ঘণ্টি আর গাড়ির মালিকদের হট্টগোলের সমবেত শব্দে আদালত চত্তরে ভারি শোরগোল বেধেছে। ডাণ্ডা হাতে উর্দি পরা ব্রিটিশ পুলিস ভিড়ের দিকে তেড়ে যাচ্ছে মাঝেমাঝে। গালাগালির তুবড়ি ছোটাচ্ছে শহরের খেটে খাওয়া মালবাহক আর আইন রক্ষকেরা। আদালতটি গড়ে তোলা হয়েছে সদ্য। গঞ্জের নাম পাহাড়গঞ্জ। কোতোয়ালি পাহাড়গঞ্জও এখানেই। শহরের যত হতভাগার দল এখানে বাস করে। নতুন শহর গড়ে তোলার কাজে কুলি আর কারিগর সরবরাহ করে এই গঞ্জ। 

ম্যাজিস্ট্রেট জনসন সদ্য সিভিল সার্ভিস পাশ দিয়ে ভারতের মত এক অনুন্নত, কালাজ্বর আর ম্যালেরিয়া জর্জরিত দেশে এসেছে চাকরি নিয়ে। বছর পাঁচেক আগে কলিকাতা থেকে এই শহরে রাজধানী স্থানান্তর করা হয়েছে। রাজা পঞ্চম জর্জ স্বয়ং দরবার বসিয়ে নাটকীয়ভাবে রাজধানী স্থানান্তরণের ঘোষণা করেছেন। বাংলা মুলুকে লোকগুলো বড় গোলমেলে, তারা সরকারি অনুশাসন মানে না। বাংলা দু টুকরো করেও খুব বেশি লাভবান হয়নি ইংরেজ সরকার। ইংল্যান্ডের সিনেট তাই স্থির করল রাজধানী সরিয়ে নিয়ে এলে সব দিক থেকে সুবিধে, শাসন আর ব্যবসা দুটোই চালানো যাবে অবাধে। এখন সেই রাজধানীতে তৈরি হচ্ছে আবার এক নতুন শহর- নয়া দিল্লি। 

দুজন বিশালদেহি সিপাই ধরে এনে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দাঁড় করিয়ে দিল মলিন পোশাক পরা এক বৃদ্ধকে। মুখে তার লম্বা সাদা দাড়ি, মাথায় ফেজ টুপি। দাড়ি আর টুপিতে এখনো লেগে আছে লাল ধুলো। ম্যাজিস্ট্রেট জনসন হাতে কলম তুলে নিয়ে একবার দেখলেন বৃদ্ধকে, তারপর টেবিলে রাখা ফাইলের উপর ঝুঁকে পড়লেন। ম্যাজিস্ট্রেটের মুন্সী এগিয়ে এল বৃদ্ধের দিকে।  

“নাম?”

“ও কানে শোনে না হুজুর”, আসামী মুন্সীর প্রশ্নের কোনও জবাব না দেওয়ায় ভিড়ের মধ্যে থেকে এক ঠেলাগাড়ির মালিক বলল। আবার জনসন মুখ তুললেন। এজলাসের চারিদিকে চোখ ঘোরালেন, তারপর ফাইলে মুখ গুঁজে দিলেন। 

মুন্সী এবার বৃদ্ধের কানের কাছে মুখ নিয়ে জোরে প্রশ্ন করল, “নাম কী?”

বৃদ্ধ আসামী এবার জোর গলায় বলে উঠল, “মহম্মদ জাফর সুলতান।”

“সুলতান? কোথাকার সুলতান হে?” হেসে ওঠে মুন্সী। তার কথা শুনে এজলাসে হাসির ফোয়ারা ওঠে। ম্যাজিস্ট্রেট টেবিল থেকে হাতুড়িটা তুলে ঠুকে চেঁচিয়ে ওঠে, “অর্ডার, অর্ডার। সাইলেন্স!”

ম্যাজিস্ট্রেটের ধমক খেয়ে এবার ভিড় শান্ত হয়। ম্যাজিস্ট্রেট  মুন্সীর সাথে ইংরেজিতে কথা বলে কাগজে খসখস করে নাম লেখে। এই দেশের ভাষা যতদিন না বোঝা যাচ্ছে, ততদিন এই মুন্সীর উপর নির্ভর করে সব কাজ করতে হবে, সেই ভেবেই হয়ত মুখে তার বিরক্তির ছাপ ফুটে ওঠে। 

এজলাসের এক কোণায় বসে থাকা দুজন সম্ভ্রান্ত পরিবারের যুবকের দিকে ঈশারা করে মুন্সী বলে, “গতকাল এই দুইজনের মোটর গাড়ির সামনে এসে পড়েছিল তোমার বলদ-গাড়ি। তারপর তুমি এদের মারধর কর। এরা তোমার নামে নালিশ করায় তোমার নামে মামলা হয়েছে। এবার সাহেবকে বল, কেন তুমি এদের গায়ে হাত তুলেছিলে?”

“আমি কেন এদের উপর হাত তুলতে যাব? এরা আমার উপর হামলা না চালালে আমার প্রয়োজনই ছিল না পালটা মার দিই”, রুষ্ট হয় বৃদ্ধ।

“আপনাদের কী বলার আছে সাহেবকে বলুন সংক্ষেপে”, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে যুবকদের এগিয়ে আসতে ইশারা করে মুন্সী। 

যুবক দুজন ম্যাজিস্ট্রেটের টেবিলের সামনে এসে দাঁড়াতেই জনসন পেন নাচিয়ে বলে, “ওয়ান বাঈ ওয়ান।”

“ইয়েস মাই হাইনেস! দিস ব্লাডি নেটিভ এটাকড আস উইথ হিস ল্যান্সেস এন্ড মাই ফ্রেন্ড দলবির সিং গট এ হেড ইঞ্জুরি”, ইংরেজি ভাষায় অভ্যস্ত ভঙ্গিতে শিখ যুবকটি বলে ওঠে। ম্যাজিস্ট্রেট তার পরনের কোট-প্যান্ট ও ঝকঝকে বুটের দিকে ভাল করে লক্ষ্য করে ইংরেজিতে সরাসরি প্রশ্ন করে, “তুমিও তো নেটিভ? তোমরা যাচ্ছিলে গাড়িতে...তা হটাত তোমাদেরই বা এই তুচ্ছ ঠেলা চালক মারতে যাবে কেন?”

“হুজুর, আমরা আমাদের নতুন কেনা গাড়িতে একটু হাওয়া খেতে বেড়িয়েছিলাম, রাস্তা দিচ্ছিল না এই বেগারটা... এত হর্ন বাজিয়েছি, তবু শোনে না। ওর বলদ গাড়ির সাথে ধাক্কা খেতে খেতে বেঁচে গিয়েছে আমাদের এত দামী গাড়ি। বেয়াদপটার চোপা দেখার মত ছিল! কোথায় ক্ষমা চাইবে, তা নয়...”, উত্তেজিত হয়ে চেঁচাতে থাকে যুবক।

“ক্ষমা? আমার কী দোষ? রাস্তা কী আপনার নামে লেখা আছে? আমি ইটের বোঝা আমার গাড়িতে চাপিয়ে চলেছিলাম রাইসিনা পাহাড়ের দিকে। আর আপনারা? গাড়ি থেকে নেমে অকারণে আমাকে মারতে শুরু করলেন বিনা প্ররোচনায়? এইটা কোন বিবেচনার কাজ? আমি গাড়ির আওয়াজ শুনতে পাইনি, কারণ আমি কানে ভাল শুনি না।” বৃদ্ধ জাফর সুলতান যে ইংরেজি জানে, সেটা পরিষ্কার বোঝে এজলাসে উপস্থিত মানুষ। ম্যাজিস্ট্রেটও বোঝেন। তাই কোট প্যান্ট পরা যুবকদের স্বস্থানে ফিরে যেতে বলে জাফরকে উদ্দেশ্য করে সে গলার স্বর চড়িয়ে বলে, “মিস্টার জাফর, ইউ টেল মি দ্য হোল স্টোরি, উইদাউট ফিয়ার।”

গরমে তেতে উঠেছে শহরের মাটি। উপর থেকে সূর্য ঢালছে গনগনে আগুন। সফদরজঙ্গ ইটভাট্টি থেকে ইটের বোঝা বলদের গাড়িতে বোঝাই করে নির্মীয়মাণ শহরের দিকে রওনা দেয় জাফর। তার পরনে খাট ধুতি, খালি গা। একটা গামছা দিয়ে শরীর থেকে লাল ধুলো ঝাড়তে থাকে জাফর। ইটের চূর্ণ তার সাদা দাড়িতে। সে গামছায় মুখ মাথা মুছে, একটা গাড়ু থেকে জল ঢেলে দেয় মাথায়। তারপর হাতের চাবুক তুলে আলতো আঘাত করে বলদ দুটোর পিঠে। ওরা চলতে শুরু করে। 

রাস্তা সোজা চলে গেছে রাইসিনা পাহাড়ের দিকে। পাথর ফাটিয়ে জমি সমতল করে তৈরি হচ্ছে ভাইসেরয়ের প্রাসাদ। তার সামনে দিয়ে চলে যাবে প্রকাণ্ড এক রাজপথ। এখন ইট বসানোর কাজ চলছে সেই পথে। শহর জুড়ে চলছে ধ্বংসের তাণ্ডবলীলা। বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট। অসংখ্য মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার, মকবরা গুঁড়িয়ে যাচ্ছে রোজ হাতুড়ি আর শাবলের ঘায়ে। জাফরের বুকে বাজে। এ তার চেনা শহর নয়, যেন সে এসে পড়েছে এক নতুন দেশে, যেখানে বাতাস দুষিত ধুলোর দাপটে। চারিদিকে শুধু ভাঙনের খেলা চলেছে। মাঝে মাঝে উর্দি পরা ইংরেজ সেনা ঘোড়া ছুটিয়ে চলেছে এদিক ওদিক। গ্রামকে গ্রাম খালি করে দেওয়া হচ্ছে নতুন শহরকে গড়ার অভিলাষে। 

অভিশপ্ত শহর দিল্লি হবে রাজধানী। দীর্ঘ ষাট বছর পর আবার নতুন করে ফেরানো হবে তার মর্যাদা। তাতে জাফরের কিছু আসে যায় না। তার এখন শুধু প্রাণটাকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদ। দিনের শেষে যে কটা পয়সা আসে, তা দিয়ে বলদ দুটোর খাবার জুটিয়ে নিজের ভাগেও কিছু পড়ে থাকে। শুধু বেঁচে থাকার জন্য রোজ একটানা শ্রম বিক্রি করা। 

কুতুব সাহিবের দিক থেকে কখন যে একটা নতুন কালো রঙের মোটর গাড়ি ছুটে এসেছে জাফরের দিকে, সে জানতেও পারেনি। মোটরগাড়ি প্রবল বিক্রমে হর্ন বাজিয়ে চলেছিল, জাফরের কানে তা স্পন্দন তোলেনি বিশেষ। তাই রাস্তা ছেড়ে পাশের জমিতে বলদের গাড়ি নামায়নি জাফর। বিপদ হল তাতেই। শব্দ করে জাফরের গাড়ির পিছনে ব্রেক কষে থেমে গেল দামী গাড়িটা। হটাত ব্রেকের শব্দে ঘাড় ঘুরিয়ে চাইল জাফর। তারপর চাবুক কষে বলদ দুটোকে নামিয়ে দিল রাস্তার পাশের জমিতে। 

“ড্যাম! ব্লাডি নিগার! দেখে চলতে পারিস না? রাস্তা জুড়ে তোর বলদের গাড়ি না চালালেই চলছিল না? কোন রাজকার্যে চলেছিস বুড়ো?” গাড়ি থেকে নেমে তেড়ে এসে বলে এক যুবক। গাড়ি থেকে নামে আরও একজন। তার হাতে একটা ছড়ি। ছড়ির মাথায় রূপোর বাঁট লাগানো। সে ছড়ি ঘোরায় জাফরের মাথা লক্ষ্য করে। জাফর মাথা সরিয়ে নেয় আঘাত থেকে বাঁচতে। প্রথমজন অশ্রাব্য গালিগালাজ করে ওঠে। জাফরের রক্ত নেচে ওঠে। সে ঘুরে দাঁড়ায়। নিজের চাবুকটা সপাটে বাতাসে ঘুরিয়ে আঘাত হানে দ্বিতীয়জনের উপর। চাবুকের বাড়ি খেয়ে যুবক আর্তনাদ করে ওঠে। প্রথমজন তেড়ে আসতে জাফর আবার তার চাবুক হানে তার উপর। সে আর্তনাদ করে লুটিয়ে পড়ে রাস্তায়।

বুড়ো জাফরকে মারমুখী হতে দেখে দুই যুবক আর আক্রমণ করা সমীচীন হবে না ভেবে গাড়ি চালু করে চলে যায় জাফরকে পিছনে ফেলে। যাবার সময় তারা জাফরকে শাসিয়ে যায় যে, কোতোয়ালিতে নালিশ জানাবে জাফরের নামে। 

জাফর মুখের ঘাম মোছে গামছা দিয়ে। গাড়ু থেকে জল ঢালে গলায়। কুলকুচো করে খানিকটা জল ছড়িয়ে দেয় রাস্তায়। মুহূর্তে সেই জল শুষে নেয় শুকনো মাটি। জাফর তার বলদ দুটোকে হাঁক দেয়, “চল রে ধলা কালা, অনেক পথ যেতে হবে।” বিড়বিড় করে জাফর, “এরা জানে না, একদিন এই দেশ ছিল আমাদের অধীন। নালিশ করুক গে যেখানে খুশি। জাফর তাতে ভয় পায় না। যত সব কাফেরের দল।”   


ম্যাজিস্ট্রেটের মুন্সী সংক্ষেপে সাহেবকে জাফরের বলা কাহিনী জানালে জনসনের মুখ কঠিন হয়ে ওঠে। সে বলে, “হোয়াট ডু ইউ মিন বাই- দিস ইজ ইয়োর কান্ট্রি? এক্সপ্লেইন!”

“আমি হিন্দুস্তানের শেষ সম্রাট মহামান্য বাহাদুর শাহ্‌ জাফরের পৌত্র, শাহজাদা মীর্জা বাবরের পুত্র। আমার এই কথা একশো ভাগ সত্য। আমি এক ভাগ্যাহত পুরুষ। যদি সেদিন ইংরেজ সেনাদের তাড়া খেয়ে শহর ছেড়ে আমি ও আমার মা না পালাতাম, আজ হয়ত এই শহরের মাটিতে মিশে যেত আমার দেহ। তখন আমি সতের বছরের এক তরুণ। আমার সামনে অনেক স্বপ্ন। আপনি যে কুর্সিতে বসে বিচার করছেন, একদিন ঠিক একইভাবে দরবারে চোর ডাকাতের বিচার করে শাস্তিবিধান দিতেন আমার দাদা সম্রাট বাহাদুর শাহ্‌।”

চোখ নামিয়ে নেন ম্যাজিস্ট্রেট। সিপাহি বিদ্রোহের কথা তাঁর জানা। কেল্লা দখলের পর অগুন্তি মানুষ নির্বিচারে প্রাণ দিয়েছে ইংরেজ সেনার হাতে, তাও তাঁর জানা আছে। বিদ্রোহীরাও হাজারে হাজারে ইংরেজ নারী পুরুষ আর বাচ্চাদের রক্তে ভিজিয়েছে মাটি। এই শহরের বুকে সেই ক্ষত দগদগে ঘায়ের মত আজও মানুষের মনে বিরাজমান। এজলাসে এই মুহূর্তে মোগল সাম্রাজ্যের এক উত্তরাধিকারী সাক্ষাত দাঁড়িয়ে বিচারের অপেক্ষায়, এই সত্য মানা বড় কঠিন। কিন্তু মানুষটার স্বাভিমান আর আভিজাত্য কেড়ে নিতে পারেনি তার দারিদ্র্য। লোকটা এতটুকু মিথ্যে বলছে না এবং দুই উদ্ধত নেটিভই যে বৃদ্ধ জাফরের উপর প্রথম হামলা করেছে, সে কথা অন্তর দিয়ে বোঝেন জনসন। 

আদালতে উপস্থিত মানুষ জাফরের কথা শেষ হতে মাথা নিচু করে। মুন্সী চোখের জল গোপন করে। জনসন আবার প্রশ্ন করেন বৃদ্ধ বলদ গাড়ি চালককে, “কিন্তু মহামান্য ব্রিটিশ সরকার মোগল রাজবংশের প্রতিটি মানুষের জন্য যে বার্ষিক পাঁচ টাকা বরাদ্দ করেছেন, সেই আর্থিক অনুদান আপনি নিলেন না কেন? কেনই বা আপনি এই নিচুতলার মানুষের মত কাজ করে চলেছেন এই বয়সে?”

“আনুকূল্যে বেঁচে থাকার চাইতে পরিশ্রম করে জীবিকা নির্বাহ করা ঢের ভালো। এই যে আমার গাড়িচালক ভাইয়েরা আমার সমর্থনে আজ আপনার এজলাসে দাঁড়িয়ে, কোনোদিন তাদেরও জানতে দিইনি আমার পরিচয়। কী হবে ঝুটা পরিচয়ে। আজ আর সেই বংশমর্যাদার কোনও মূল্যই নেই। যে কটা দিন বেঁচে আছি এই শহরে, মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। দিনান্তে যে কটা পয়সা পাই, আমার প্রিয় বলদ দুটোকে খাইয়েও আমার পেট চলে যায়। এই তো বেশ আছি! এই শহর থেকে পালাতে পালাতে কত দেশ, কত পাহাড়, কত মরুভূমিতে তাড়া খেতে খেতে শেষ বয়সে সেই ফিরতেই হল। মহামান্য ব্রিটিশ সরকার ঐতিহ্যময় এই শহর নতুন করে গড়ে তুলছেন, কত রোজগারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন, আমি এতেই বড় খুশি। আমার আজ আর কিচ্ছু চাই না, কিচ্ছু না।”

“জাফর সুলতান যেহেতু প্রথমে দুই যুবকের উপর হামলা করেনি, আর বিনাপ্ররোচনায় আক্রান্ত হয়েছে, তাই তার অপরাধ সাব্যস্ত হয়নি। দুই যুবককে দশ টাকা জরিমানা করা হল। জরিমানার টাকা জাফরকে দেওয়া হবে।” ম্যাজিস্ট্রেট উঠে দাঁড়ান চেয়ার ছেড়ে। মুন্সী জাফর সুলতানকে একবার কুর্নিশ করে কাঠগড়া থেকে নামতে সাহায্য করে। 

জাফর বিড়বিড় করে ম্যাজিস্ট্রেটের দিকে ঘোলাটে চোখ তুলে বলে, “মে গড ব্লেস ইউ মাই সন।”