সম্পাদকীয়




দশটি সংখ্যা দেহলিজের পার করে যাবার পর এবার ফিরে আসা গেলো দিল্লির দরজা পার করে । ফিরে আসা গেলো, দিল্লির আপন ঘরে, যেখানে সোনা বোঝাই করা দিল্লি হাটার্স । দিল্লির তরুণ কবি, পাওয়ার পোয়েট্রির জঙ্ক দীপংকর দত্তকে নিয়ে করা হলো ক্রোড়পত্র । 

এমনই একটা সময়, ছড়িয়ে পড়েছে সমগ্রতা । সংবাদ আর সংবেদন যখন মুঠো মুঠো বাজারে বিকোচ্ছে । এমন বিস্তারিত বোধহয় সুররিয়ালিজমও আকার পায় না । যে সমস্ত ব্রেন ও ব্রেভ এইরকম ভেবেছিলো, প্রকাশ করেছিলো এই এক দশক আগেও, তাদেরকে সেই সময়  আমরা ফুত করে উড়িয়ে দিয়েছি । আজ আমরা বুঝতে পারি আমাদের অগ্রজরাই  এই সমস্ত প্রেডিক্ট করে গেছেন । সমগ্রতা এখন বলা যায় একটা সম্পৃক্তির দিকে যাচ্ছে । এতো ইনফরমেশন বুম, মানব সভ্যতার ইতিহাসে দেখা যায় নি । এতোটা বাজার সর্বস্বতা, পণ্যময় পৃথিবী, ধবনিময় কবিতা আগে দেখা যায়নি ।  কবি দীপঙ্কর দত্ত আমাদেরকে ইশারা করেছেন পাওয়ার পোয়েট্রির দিকে । যখন আধুনিক সাহিত্যধারা পর্যায়ক্রমে উত্তর আধুনিক সাহিত্যের গতিপথে যাত্রা করলো, অথচ বিলীন হয়ে গেলো না। বরং একটা গতির সমান্তরাল দেখা দিলো । এবং গতিটা এক রৈখিক না । জ্যামিতিক হওয়ার দিকে এগিয়ে গেলো । ভৌগলিক হবার দিকে পাড়ি দিলো । কবি, দীপঙ্কর দত্ত বল্লেন হাটের মাঝে কবিতা পড়ে, হাটের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার সমইয় এসেছে । এখানেই পাওয়ার পোয়েট্রি । পাওয়ার একটি গণিত বিশেষ । সমগ্রতার কবিতা । 

কথায় কথায় দীপঙ্কর দত্ত চলে আসে । কিংবা আনা হলো । কবি,  দীপংকর দত্ত ও ১০ জানুয়ারী ২০১৭  এক সকালে ছোট ছোটে শ্বাসে খতম হয়ে গেছেন । বন্ধু বান্ধবেরা তাকে হিন্ডনের জলে ভাসিয়ে দিয়ে এলেন । তার শ্রাদ্ধশান্তি করা হলো মহাবীর এনক্লেভে । তার ল্যাপটপ আটকা পড়ে থাকলো গাজিয়াবাদে । এইটুকুই ইতিহাসে লেখা আছে । 

আর কথাটা হলো যেহেতু জ্যামিতিক অন্যভাবে ভৌগলিক, আমরা যারা দিল্লির তরুণ, আমাদের কাছে পাওয়ার পোয়েট্রি  এসে ধরা দিলো দিল্লি হাটের ভৌগলিকে । দিল্লির দারুণ ঠান্ডায় এই ভেজা ভেজা কবিতার বাজারে সামান্য উষ্ণতা নিয়ে দেহলিজ সেঁকে নিচ্ছি । কবিতার হাটবাজার নিয়ে নাক সিটকানোর দিন শেষ । কোন কিছু নিয়েই আর এক্সট্রিম ধারনা করা যাচ্ছে না । ধারনা মিথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, মিথ সমগ্রতার দিকে, সমগ্রতা সম্পৃক্তের দিকে যাচ্ছে । সেই ভাবে চক্রবত পরিবর্তনন্তে কবি  দীপঙ্কর দত্ত একটি মিথ, তার একটি ক্রোড়পত্র করা হলো । 

বন্ধুবান্ধব মিলে দীপঙ্কর দত্তকে একটি বট গাছ হিসাবে ধরা যায় । কিংবা দিল্লি হাটের নিম গাছ । তিন কুলে যার কেউ নেই । যখন পার্থিব শরীর তুলসীনিকেতনে পড়েছিলো , কোন আত্মীয় তা জানতেন না । তার ফোন থেকে কল আসতে থাকে বিভিন্ন কন্ট্যাক্টে । তার একটি বেসিক ফোন, তাতে ভরা ছিলো সাহিত্যরসিকের সম্ভার । প্রত্যেকজন কবি, লেখক আজ এইভাবেই তার স্মৃতিচারণ করে থাকেন । ক্রোড়পত্রটি কবি,  দীপঙ্কর দত্তকে উতসর্গ করা হলো । আজ বটগাছের ঝুরি নেমেছে । দেহলিজ বটগাছকে রিপ্লেস করে না । গাছকে বৃক্ষরূপে প্রতিস্থাপন করাই হবে এই ক্রোড়পত্রের সার্থকতা । 


সম্পাদকঃ 

পীযূষকান্তি বিশ্বাস

মহাবীর এনক্লেভ, নিউ দিল্লি

ভারত -  ১১০০৪৫

ইমেলঃ poet.area@gmail.com