ওগো শীত, ওগো শুভ্র, হে তীব্র নির্মম,


তোমার উত্তরবায়ু দুরন্ত দুর্দম


অরণ্যের বক্ষ হানে। বনস্পতি যত


থর থর কম্পমান, শীর্ষ করি নত


আদেশ-নির্ঘোষ তব মানে। “জীর্ণতার


মোহবন্ধ ছিন্ন করো’ এ বাক্য তোমার


ফিরিছে প্রচার করি জয়ডঙ্কা তব


দিকে দিকে। কুঞ্জে কুঞ্জে মৃত্যুর বিপ্লব


করিছে বিকীর্ণ শীর্ণ পর্ণ রাশি রাশি


শূন্য নগ্ন করি শাখা, নিঃশেষে বিনাশি


অকাল-পুষ্পের দুঃসাহস।


হে নির্মল,


সংশয়-উদ্বিগ্ন চিত্তে পূর্ণ করো বল।


মৃত্যু-অঞ্জলিতে ভরো অমৃতের ধারা,


ভীষণের স্পর্শঘাতে করো শঙ্কাহারা,


শূন্য করি দাও মন; সর্বস্বান্ত ক্ষতি


অন্তরে ধরুক শান্ত উদাত্ত মুরতি,


হে বৈরাগী। অতীতের আবর্জনাভার,


সঞ্চিত লাঞ্ছনা গ্লানি শ্রান্তি ভ্রান্তি তার


সম্মার্জন করি দাও। বসন্তের কবি


শূন্যতার শুভ্র পত্রে পূর্ণতার ছবি


লেখে আসি’, সে-শূন্য তোমারি আয়োজন,


সেইমতো মোর চিত্তে পূর্ণের আসন


মুক্ত করো রুদ্র-হস্তে; কুজ্‌ঝটিকারাশি


রাখুক পুঞ্জিত করি প্রসন্নের হাসি।


বাজুক তোমার শঙ্খ মোর বক্ষতলে


নিঃশঙ্ক দুর্জয়। কঠোর উদগ্রবলে


দুর্বলেরে করো তিরস্কার; অট্টহাসে


নিষ্ঠুর ভাগ্যেরে পরিহাসো; হিমশ্বাসে


আরাম করুক ধূলিসাৎ। হে নির্মম,


গর্বহরা, সর্বনাশা, নমো নমো নমঃ।