নিংড়ে নিই দিন



এভাবে না বাঁচলে আমাদের চলে না যে বস্! 

কী করব ট্রেন যদি সিগনালে থামে প্রতি ভোরে, 

বাস পৌঁছে ফেঁসে যায় বাইপাসে স্ট্যান্ডের জ্যামে? 

রিক্সা, অটো, এমনকি টাঙাগুলো জানে দৈনন্দিন, 

লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে হর্ণ দেয় রাস্তার ওপারে। 

বাচ্চাবুচ্চি, সুটকেস গিন্নির মদতে কোলেকাঁখে, 

লাফিয়ে নামি পাথরে, ঢাল বেয়ে দেয়াল টপকে ...

কখনো পা হড়কে জবর্দস্ত চোট খায় কেউ, 

কখনো চমকে বুঝি আপ ট্রেন কাছে এসে গেছে ... 

ধুলোপথে বাড়ি যাই, পরে বেশ ফলাও শোনাই 

বেমক্কা সমস্যা থেকে খুঁজে খুঁজে মজার চুটকি। 

কাদের বোঝাবে কে, সতর্কতা, আইন-বেআইন? 

হিমসিম খেয়ে এই বাঁচামরা সাধে কি সইছি? 

নিংড়ে নিই দিন, যাতে আনন্দেরি স্বাদটুকু থাকে। 


পিচ্ছিলতা আছে 


‘চোখ গেল’ পাখিটার ডাক যে ঈষৎ বদলেছে খেয়াল রাখিনি

রেলগাড়ির নতুন রঙে আর কখনো সবুজ কখনো বিষন্নতার 

সাথে তার নতুন ঘষার

                              বিতর্কে মজে গিয়েছিলাম

অথচ বোরওয়েলের গর্তে বাহাত্তর ঘন্টা আটকা পড়েছিল শিশু

দিগন্তে ধুলো উড়িয়ে আসছিল সেনার ত্রাণদল জেলা প্রশাসন

ওটা যে সময়ের ধুলো খেয়াল ছিল না


হঠাৎ মাথার ওপর দিয়ে আরবার উড়ে গেল পাখিটা

এবার স্পষ্ট শুনলাম ‘যুগ গেল’

এখন স্পষ্ট মনেও রাখতে পারি না ক’বছর সোভিয়েত যুগে বাঁচলাম

ক’বছর শুনলাম সে সোভিয়েত সামাজিক সাম্রাজ্যবাদী

আর ক’বছর ইয়েল্‌তসিনের বিয়ারের হ্যাঙোভার কাটালাম

সামূহিক প্রতিবাদোৎসবে …


শুধু আমাদেরই নয় খোদ রবিঠাকুরের

গা ঘেঁষে ঘুরছে খুনে পান্ডারাও ইতিহাসের পরিখায়

‘ভারততীর্থ’ ডাক দেওয়া কোনো পাখি নেই সরীসৃপও নেই

আমি আছি অথবা এবং আমিই আছি কিছু কম নই 

রাতের প্ল্যাটফর্মে, বাসস্ট্যান্ডে, তাঁবুতে লাল ঝান্ডায় 

আর পিচ্ছিলতা আছে উঠে আসা জল আছে পরিখায়


সৃষ্টিছাড়া


আজ একটু বেরুব।

রাস্তাগুলো সবই তো পুরোনো,

নিজেকেই নতুন করে নেওয়া ছাড়া 

উপায় নেই আকাশের ঘড়ির দিকে তাকাবার।

তাও ভালো যে আকাশের 

              ঘড়িটা পুরোনো হয় না কোনোদিন।

সে ঘড়ি পুরোনো হলে

সৃষ্টিই যে হত সৃষ্টিছাড়া! 


তবে মায়ের বকুনি বুকে নিয়ে বলা যায়

সৃষ্টিছাড়াই বিশ্ব কাঁপায় তার দুরন্তপনায়।

মা জানে, 

সৃষ্টির উপায় নেই সৃষ্টিছাড়া হওয়ার।

ঘরের ছেলেমেয়েরা হয়। 

তাদেরই মুখ চেয়ে তো কক্ষনো

পুরোনো হয় না আকাশের ঘড়ি।


বিকেলে বেরুবার সময়

কোনো এক সৃষ্টিছাড়ার কথা আগে ভাবব চৌমাথায়।

তারপর আকাশের ঘড়ির দিকে তাকাব।

জানি, নতুন

এক টুকরো গোলাপি মেঘ সে আমাকে দেবেই।