কবিতার কোন দিন নেই



প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত




তুমি যে বলছো

আজকে দিনটা কবিতার

তবে কেন আমি

প্রত্যহ দেখি ছবি তার?



ধমকে বলেছো

শোনো হে, দিনটা পদ্যের

বোকা কালিদাস

আমিও মন্ত্রমুগ্ধের -



মত কেটে যাই

ডালপালা যত ভাবনার

অক্ষরে বাঁচি, মরি

কি বা যায় আসে তার,



জিতবে তুমিই

শানানো যুক্তি, তর্কে

আমি পরাজিত

নিচেই থাকবো, স্বর্গের



আহা, তাও ভাল

সে স্বর্গসুখ তৃপ্তির -

জ্বলে আর নেভে

অনন্তময় দীপ্তির



মত জেগে থাকা

ঘুমের আড়ালে পদ্য

দু এক কলম

লিখেই ফেলেছি, সদ্য



তবুও বলবে

আজকে দিনটা কবিতার

কেন যে বোঝো না

আমিই যে তার...সবই তা!






উচ্চতা




অবশেষে, আমি পৌছালাম সেখানে

আর ভীষন ভয় পেলাম -



আমার শহরের নাগরিকেরা, শোনো!

কী ভয়ঙ্কর এই স্থান

যেখানে শহরের সমস্ত সিঁড়ি একত্রিত হয়ে

করেছে যে উচ্চতার নির্মাণ



সেখানে কেউ থাকেনা...



~

হিন্দী কবি কেদারনাথ সিং'র (১৯৩৪-২০১৮) কবিতা 'উঁচাই' এর অনুবাদ।




পিতৃব্য




জানি, কখনো সে অর্থে বন্ধুত্ব হয়নি আমাদের।

জানি, কখনো মনে রাখতে পারিনি তোমার জন্মদিন...

জানি, রয়েছে দুটো মানুষের মধ্যে এক পৃথিবী ফারাক

জানি, কখনো জানতে চাইনি 'ভালো আছো' কিনা,



তবুও তুমি শিখিয়েছ হাত ধরে সাদা-কালোর তফাত

তবুও তুমি রেখেছ পিঠে হাত, সমস্ত ব্যার্থতার পরেও-

টেনেছ কাছে তবুও, বুঝিয়েছ শেষেরও আছে শুরু, তাই...

টেনে হিচড়ে দাঁড় করিয়েছ মুখোমুখি যত প্রতিকূলতার



আমি শুধু হেসেছি, ভেবেছি এ কি প্রাচীন ভাবধারা

শান্তিরক্ষক তবু বোঝাপড়ার গান গেয়ে চলেছে নিরন্তর

দুটো মানুষ...দুটো পৃথিবী...মাঝে সেই আবহমান ফল্গুধারা

পার হয়ে আসছে একসাথে, হাতে হাত অখন্ড "সত্তর"...








সিরিয়া




মৃত শিশুদের আত্মারা স্বপ্নে এসে ভিড় করে।



তারা বলে, "ঘুমপাড়ানি গান জানো? এভাবে জেগে থাকতে চাইনা আর!"



আমি জেগে উঠি।

ঘুমজড়ানো গলায় তাদের গান শোনাই।

অজানা, অদ্ভুত ভাষায়...



আর দেখি, আমার পাশে অকাতরে, শান্তিতে ঘুমোচ্ছে আমার সন্তান।



এই সময়,

পৃথিবীর সব ঘুমন্ত শিশুদের মুখ কেন যে একরকম মনে হয় কে জানে...