( ১ )

আমি দেখিতাম শুধু তারে!

মধুর চাঁদনীময়ী মধুরা যামিনী,

শশধর হাসিত অম্বরে!

সে থখন ধীরে ধীরে, এসে এই নদীতীরে,

গাইত প্রেমের গীত মাতায়ে ধরণী ;

তাহার মধুর স্বরে মুকুতা পড়িত ঝ’রে

নীরবে বহিয়া যেত আকুলা তটিনী!

আমি দেখিতাম শুধু তারে!


( ২ )

সে আমার সুখে দুঃখে প্রাণের সঙ্গিনী!

তারি তরে বেঁচে আছি ভবে!

জীবন-জলধি-পাড়ে, আর কি পাইব তারে

এক দুই করে আমি মাসদিন গণি!

সে চাঁদ ওঠে না আর, ঢালে না সে সুধা ধার,

আমি তার সে আমার — শুধু এই জানি!

সে আসিবে কবে!


( ৩ )

তাহারি চরণ চুমি বনকমলিনী

ফুটিয়া উঠিত থরে থরে!

সে নিতি উন্মুক্ত কেশে, ফুলরাণী-বেশে এসে

দাঁড়াইয়া এই সরঃতীরে

গাইত প্রেমের গান, আকুল করিয়া প্রাণ

বিহগ শিখিত সেই প্রেমের রাগিনী!

আমি দেখিতাম শুধু তারে!


( ৪ )

সে সদা কুসুম-সাজে এলাইয়া বেণী

আমার এ প্রাণ নিত কেড়ে!

চারিধারে পুষ্প-তরু, বায়ু ব’ত ঝুরু ঝুরু

কোকিল তুলিত কত কুহু কুহু ধ্বনি!

হেরি তার রূপরাশি, হেরি তার প্রেমহাসি,

পাপিয়া আকুল প্রাণে হ’ত পাগলিনী!

আমি দেখিতাম শুধু তারে!


( ৫ )

তাহারি রূপের ছটা উজলি ধরণী

ঝরিয়া পড়িত চারি ধারে!

আকাশে চন্দ্রমা-তারা, তারি প্রেমে মাতোয়ারা

নয়নে খেলিত তার চঞ্চলা দামিনী!

বুকেতে অমৃত-খনি কণ্ঠে সুধা-নির্ঝরণী

সৌন্দর্য-সরসে সে যে ফুটন্ত নলিনী!

আমি দেখিতাম শুধু তারে!