পিস্তল সিরিজ



সোনালী মিত্র




বালি দিয়ে পরজন্ম বাঁধা । আর একটা অন্তরঙ্গ ঘনিষ্ঠ দৃশ্য ।

সমস্ত চুমুগুলো রিলমাস্টারের ব্যাগে । অর্থাৎ তিনিই চুম্বনের দেবতা !

#

আর ওই ফোঁসফোঁস , অষ্টবক্র , মদ্দা ঢেমনাসাপ , নীলসাপ

তোবড়ানো গালের অগস্ত্য তবু গিলে নিচ্ছে লোলুপবিষ ।

শরীর থেকে ঘাম ঝরে গেলে , দেহকে চেনে না দেহ

আর মরতে চাইছে না কুলিকামিন , চটচটে আঠা তখন ঘামে

#

বেহেস্ত চেয়ে চক্রবৃদ্ধি হচ্ছে লোভ । আর একটা বহুরঙ্গ ব্যাঙ্কের

দিকে আফ্রোদিতির মতো । পিস্তল এ-কে সিরিজ নিয়ে লুকিয়ে পড়ছে ।

#

স্নান সেরে উঠে আসছে ,মধুস্তন । বোঁটা পোড়াধান , কালো ।

সর্বনাশ খাতায়-কলমে লিখে ফাঁসি চাইছে একটা শব্দের ফাঁসি

জরায়ুমাটি আমার,কাঙালবিদায় ভঙ্গীতে পিল গিলে জিরো - ওগো জিরো

জিও সিমে হোয়াটস আপ - কল্লোলিনী নাভিভ্রুম দেখ ।

#

তিনরাস্তায় ট্র্যাফিক নিভে পাগল ও কুকুরের খেওখেয়ি -ডাস্টবিন ।

বিধি বাম হচ্ছে , দাবানল খিদে বেঁয়ে সুড়ুত টানছে গাঁজা , মেয়েটিকেও

কম যাবে না - যদিও পাবে না সোনারখাট ।

খ্যাতি এস শব্দে , বউবউ খেলি - শব্দের ধর্ষক জানবে না কেউ ।

তো বোলো ওম শান্তি ওম শান্তি শান্তি ওম






মুদ্রারাক্ষস




পুরনো পয়সা জমিয়ে নিজেকে রাজা সাজাবার

বাবার এক অদ্ভুত নেশা ছিল ।

সেইসব ধাতুর কয়েনের মধ্যে থেকে দুপুর গভীর হলে

বেরিয়ে আসতো সমুদ্র গুপ্তের সারঙ্গীর অলৌকিক রোশনি ,

পাল-সেনদের রক্তমাখা তরবারির সদর্প উল্লাস,অশোকের ধর্মস্ত্রোক।

বাবার শিরায় ছলকে উঠতো মৃত-জমিদারির ক্ষুধার্ত লোলুপ বাঘ

আমরা ভয়ে সিটিয়ে যেতাম মায়ের কোলে ।

বাবা বিপিএল কার্ডে চাল-গমের হিসেবের থলে নিয়ে ঢুকে

যেতেন পুরনো কয়েনের ভিতর ,উন্মাদগ্রস্থ নেশায়

একদিন রাজা হবেন বলে ।

আমরা বাবার বুকের মধ্যে শুনতে পেতাম ধাতব চিৎকার,

আফিম ক্ষেতের মধ্যে অসফল মানুষের নঞ্চর্থক সুরের গোঙানি ।

মায়ের শাক তোলার প্রবল নেশা ছিল

ভূতে পাওয়া মানুষের মতো ছুটে যেতেন খালেবিলে ।

বড় হয়ে বুঝেছিলাম , অভাবী মায়েরা আসলে জ্যান্তভূত , সন্তানের

পেট ভরাতে কোনও অবলম্বন পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়তেন তার ওপরে ।

আমারও নেশা আছে সম্পর্ক গিলে খাওয়ার ।

অন্ধকারের মধ্যে খুন করে নিজের আত্মমুখ খাই ,

আর খেতে খেতে দেখি আমার শরীর থেকে মুছে যাচ্ছে ব্যক্তিগত চিত্র

বাবার দীর্ঘছায়া ঘন হচ্ছে আমার মুখের ওপরে ...