মুখ ও মুখোশ

রবীন বসু




তোমরা তো সবই জানো

আমি কিছুই জানি না


কী করে বিদ্ধ করো

কী  করে শান দাও দাঁতে


মুখের পাশে মুখ রেখে

তবু মুখোশটা নিয়ে খেল


জনারণ্যে আমি একা

তোমরা ছায়ার প্রতিনিধি


হু-হু বাতাসে ছোটে বাণ

কী করে বাঁচাব আমি প্রাণ!




গলায় ফুটেছে এক কাঁটা


কে যেন মারছে ঘাই, কে যেন ডুবছে জলে

গভীরতা মেপে নিয়ে ওলনদড়ি

সাঁতারে ভাসছে দেখি সমুজ্জ্বল চিৎ

ও ভাসানে স্রোত আছে, বিকল্প নির্মাণ

প্রতি হাত খর্ব হয় প্রতিটা প্রণামে অস্থির

যত শ্রদ্ধা ঝরে পড়ে তারও অধিক ঘৃণা

সন্ত্রাসকবলিত আমাদের ট্রমা


দেশ এই, মাটি এই ভাগাভাগি হয়

কে বড় দেশপ্রেমিক আজ বলা নয়

বিড়ম্বনা চেয়ে থাকে প্রাত্যহিক গমনাগমন

বুকের গভীর শুধু ধরায় শমন

গ্রেপ্তারে কম্পন জাগে, কেঁপে ওঠে মাটি

রিখটার স্কেলে তাই দেশপ্রেম মাপি


মাপামাপি হয়ে গেলে ব্যস্ততায় হাঁটা

ও ভাই একটু দাঁড়া, গলায় ফুটেছে এক কাঁটা!




ভ্রমণের ঘোড়া


এত ক্ষয় নিয়ে প্রাচীনমুদ্রার মত জেগে থাকি রোজ।

দেড়খানা বিস্কুট আর এককাপ বাদামি চা

আমাকে অনন্তের পথ দেখায় ;

ঝিকিমিকি তারা, উদ্ভাসিত অন্ধকার

নৈকট্যের ফাঁক গলে অন্য গ্যালাক্সির দিকে

চলে যাওয়া এই যে আমার সকাল বড় মায়াময়।

দৃশ্যের গভীরে জ্বলে ওঠে আলো

স্মৃতিকণা, টুকরো সম্পর্ক, বিরহের অধীরতা

সব আজ ভ্রমণের ঘোড়ায় চেপে বসবে ;

ঘাড় হেলিয়ে গতির লাগাম টেনে আমি তাতে

হ্রেষা দেব, উত্তেজনার পারদ…

আলেয়া-বিভ্রম নিয়ে হেঁটে যাবে নিশ্চিত আগ্রহ ;

পিপাসা জলের কাছে, জল ধরে মরীচিকা

অঞ্জলি নির্ভুল না, শূন্যতায় ঝুলে আছে

আমাদের যাবতীয় শোক ও সন্তাপ। তবু, ঘাম ক্লান্তি 

অন্বেষণ ছুঁয়ে ছুঁয়ে জেগে থাকবে ভ্রমণের ঘোড়া!