অরিত্র চ্যাটার্জি
লেখক / সংকলক : অরিত্র চ্যাটার্জি
হাফলং যাইনি আমি
অরিত্র চ্যাটার্জি
হাফলং যাইনি আমি, আদৌ কি কখনো যাব
তবুও সেখানের জলবায়ু,
যা কিছু স্থানীয় সমাচার
নিরুদ্দেশ হতে চাইলে জেনে রাখা ভালো
এবিষয়ে আবহাওয়া দপ্তরে
একদিন ফোন করব ভাবি
আন্তর্জালের সুতো ছিঁড়ে আমি এই অলস দুপুরে
অস্থায়ী অপারেটরের সাথে
হয়তোবা তরল আলাপ
করে ফেলব সাহস করে, বর্ষাতি নেব কি না
এইসব জটিল আলোচনা- আসলে জানেনই তো
আমি চাই, রোজ রাত জাগা সেই নীল মেয়েটি
জীবন বিষয়ে যে কেন জানি এখন
বড়ই পরাঙ্মুখ
সমস্ত হিসেব মিলিয়ে আরো দশক দুই পর
ইনশাল্লাহ, সে তখন পঞ্চাশ বর্ষীয়া
যেন ভরপুর সংসারী
ঈষৎ পৃথুলা তার সম্পৃক্ত মুখখানি দেখে
লামডিং থেকে হাফলং, ওই সুদীর্ঘ হাইওয়ের
মাঝ বরাবর কোথাও, জনৈক মরীচিকার ন্যায়
খুব নিশ্চিন্তে নিরুদ্দেশ হয়ে যেতে পারি …
আমি এখন চার্লস বুকাওস্কির দেশে আছি
গাছগুলো লাল হয়ে যাচ্ছে আর দেখ, আজকের দিনটাও
কেমন বেবি পরিজের মত – ঠাণ্ডা হয়ে আসছে দ্রুত
ক্যাব ড্রাইভার আমার দিকে তাকিয়ে হাসল আর আমিও
বেবি পরিজ কখনো খাইনি সেভাবে – তবু খানিক ভাবলাম
এই গোটা সময়টা রেডিওতে দুজন অনর্গল ভাট বকছিল
মুসোলিনি আদৌ ফ্যাসিস্ত না একজন সোশ্যালিস্ট- এবিষয়ে
খানিক তর্ক শুনলাম দুজনেই – শুনলাম আর হাসলাম
এগুলো আসলেই এক একটা দু’অক্ষর, চার’অক্ষর
নীল কাচের বাইরে একটা জটলা বাঁধছে – সেদিকে
একদৃষ্টে তাকিয়ে সে খানিক অন্যমনস্ক হয়ে বলল-
আর এই অসহ্য উইকেন্ডটা কিভাবে কাটালে তুমি
আমি তো গাড়ি অবধি বার করিনি রাতে
শালারা মাঝরাতে গাড়ি ডাকবে আর নোংরা করবে
সে অল্প থামে- সেটা একটা সময় ছিল যখন
আমার পকেটেও রাখা থাকতো ওই সাদা গুঁড়ো
আর কোডগুলোও সব জানতাম, কিন্তু তারপর -
তারপর ওয়াবাশ নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে
আর আমাকে তো এখন দেখছই - কি মনে হয় চেষ্টা করছিনা
যাতে অন্তত পরের সপ্তাহ অবধি টিকে যেতে পারি,
এই ভাবে আরেকটা সপ্তাহ এবং তারপর আরেকটা
আমি মাথা নাড়লাম- ডিসেম্বর আসা অবধি আমিও
অনেকটা এরকমই ভেবেছি – অথবা এর বেশী কিছু
ভাবিনি- আমি আসলে আর ভাবার খুব বেশী চেষ্টা করিনা
আমার বন্ধুরা যখন কবিতায় লেখে আবার যুদ্ধে যেতে হবে
আমি হয়ত খুব মন দিয়ে কয়েকটা স্ক্রু-র মাপ খুঁজেছিলাম
পরিচিতের অস্বাভাবিক মৃত্যু অথবা রুটিন দুঃখের খবরে
আমার প্রতিক্রিয়াহীন এই আপাত নিশ্চেষ্ট ভাব- যেন মাথার ভেতরে
আজকাল কেউ ক্রমাগত বলে যায় “ডোন্ট ট্রাই”– শুনে মনে পড়ে
আমি আদতেই এখন চার্লস বুকাওস্কির দেশে আছি …