আলো



স্বাতী  নাথ




পিত্থিবীট কত বড় হে

           কত্ত রকম মানুষ জন

ভালো মাইনষের অভাব বড়

             তুমহি যে তার একজন



লাল পাহাড়ির ম্যায়ে আমি

              মুখ্যু সুখ্যু মানুষ আছিই

এই পাহাড় টর বাইরে আমি

               লাই জাইনতম কিছুই



চৈত ফাগুনের উদমা হাওয়ায়

                রদের ত্যাজে মাটী  খরায়

লাচে লাচে লাল ধুলাট

                  গ্যায়ে পড়ে সুহাগ জানায়



ভাদর মাসে জলের দিনে

                   ধান বুনি সারাট দিন

বাকি সময় মাটী কাটি

                    ইঁট বইয়ে দিন গুজারি



ম্যায়া মরদ নুনু বুড়হা

                   কাম ছাড়া কেউ থাকতে লারে

পান্তা ভাতে প্যাট ভরায়ে

                   টুটি ভিজাই মহুল রসে



কাইটছিল দিন এমনি ভাবই

                   বাঘমুন্ডির পাহাড় খানে

আইলে তুমি দিদিমুনি

                    জ্ঞানের আলো জ্বালাই দিতে



বইদল্যে দিল্যে সকল কিছু

                   দেখলম তুমহার চখে দুনিয়াট

কত্ত কিছু জানার আছে

                   বুঝাই দিল্যে তুমি সিট



মানুষ হামরাও ----

                    সিটাই তুমহি শিখহাই দিল্যে

মাইনব না আর চখ রাঙানী

                     বড়লোক  ওই বাবুদিগের



হামরা খাইটে চাষ করি

                      আর উরা ভরে গুলা

পান্তা আমানি খ্যায়ে কাটাই

                        উদের বিলিতীর ফুয়ারা



চইলবে না আর এমনি ভাব

জোর জুলুম মুদের উপর



লড়াই কইরে ছিনাই লিব

সকল খানের হক ট মুদের।








একাকীত্ব






কেটে যায় দিন, বয়ে যায় বেল

জীবনের ক্ষণ  গুলি শুধু যে একেলা

কত বসন্ত ও বৈশাখ এলো আর গেলো

মনের আঙিনায় কেউ এলো নাতো

ডুরে পাড় শাড়ী  তে আলুথালু কেশে যে

ছুটে বেড়ায় বনে আলতা মাখা পায়েতে

বকুলের মালা গেঁথে হয়তো বা আনত

কল কল নদীর মতো উচ্ছল সে হোতো

জ্যোৎস্না রাতেতে গাইত যে গান

মুগ্ধ প্রেমিক আমি, বাঁশী  বাজাতাম

কাটতো সাঁতার সে ছোটো নদীটির জলে

পিছু নিতাম তার, আমি হাঁস হয়ে

গ্রীষ্মের দুপুরে গাছের তলায় পড়তো সে বই

যেন কোনও চিত্রকারের আঁকা ছবিটাই

ঝর ঝর বর্ষায় মুখরিত বন

ময়ূরের মতো নেচে উঠে দুটি মন

রোদ ঝলমল খুশিতে হাসে শারদের আকাশ

নদীর চরে দুজনে ফুটে উঠি হয়ে কাশ

শিউলি  ঝরানো বীথিকায় বসি দুজনায়

কথার মালা গাঁথতাম শারদ পূর্ণিমায়

 পৌষের দুপুরে মেঠো পথ দিয়ে

হারিয়ে যেতাম দুজনে বাউলের সুরে

 মৌ হয়ে বসন্তে ফুলের মধু খেতাম

ফাগের রঙ এ দুজনে রঙিন হতাম

এমনি ভাবে মনকে রাঙাতে এলো নাতো কেউ

শূন্য বাগানে কেউ ফোটাল না ফুল।






গাজন






অ বুধুর মা শুন ক্যানে

গাজন ট য় লাই যাবি?

কত্ত কিছু হুঁইতেছে রে

কত্ত বাজনা, লাচ

দুকান বইসছে কত

লাল,নীল চুড়ি মালা

কিনবিক লাই,লাগর দোলা ট চাইবিক লাই?

সাধুরা সব আইছেরে,চড়ক গাছ ট ও হুঁইছে

কী র‍্যা সাড়া দিস না ক্যানে

কী অতো কাম কইরছিস?



অতো চিচাঁও ক্যানে বুধুর বাপ?

গাজন টর কুথা জানো

আর কাইলকে কি আছে

সি ট জাইনলে না,

কাইলকে লিতুন বছর শুরু হবেক গ

বোশেখের পেত্থম দিন

তার লিগে ঘর ট সাফাই কইরে

গোবর ল্যাতা দিতে হব্যে

ফুল দিয়ে সাজাই মারাং বুরুর পূজা হবেক গ

কাইলকে আর মাড় ভাত ট চইলবেক লাই

হবে ঝইলাসানো মাস আর মহুল রসের হাঁড়িয়া

রেতের বিলা মাথায় চাঁপা ফুল গুঁজ্যে

ধামসার তালে তালে তুমহার সাইথে

কোমর  দুলাই লাইচব আমি ঝুমুর লাইচ ট

তার আইগে লতুন চুড়ি মালা কিইনব আমি, গাজনের মিলাটয়

ইয়ার পরে তো শুরু হবেক খরার দিন

রদের ত্যাজ ঝলসাই দিবেক গাঁ ট কে

উয়ার আইগে মাইতব সবাই লাচের তালে।