অভি সমাদ্দার
অভি সমাদ্দার
লেখক / সংকলক : iPatrika Crawler
বিভাব
১.
আমি তো অহং নাত্র। তল তন্ন সংগ্রাহক। ফুল-ফুল, গন্ধ-সুগন্ধ ছড়িয়ে দেখি, ফিকে একটা চাঁদ উঠেছে আকাশে।
যার তলে ওই যে দূরে রাধেশ্যামমোড়,ওই যে দূর্বাদল ছায়ামাঠ, দূর সুতোয় সম্পর্ক বুনে দিচ্ছে। বুনে দিচ্ছে তরল পথের
জোনাকি গুঞ্জন। দেখো সে পথ ধরেই ফিরে আসছে আতস নীচের একার্ত । সে পথ ধরেই আত্ম- আত্মন্, মন-মর্মর কথা তুমুল করি। অথবা বীজরোপণের দিনে যে নীরযাপন, তার ইলশেগুঁড়ি আতিথ্যে পাখিদের বলি, যাও পাখি, দানের কৌশলে যে আলোদানা ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি, তার রোদ-রোদন,বিষয়-বিষন্ন খুঁটে নাও, খুঁটে নাও অক্ষরে আলতো পাথরের মনোধ্বনি!
২.
তুমি কি মন্ত্রেই জেগে ওঠো, হে বলার বৃন্তে বৃন্তে যে ঊর্ণাজাল জড়িয়ে ওঠে পথে বিপথে যে আকুল গুল্মফুল রং ছড়িয়ে দিচ্ছে তার অন্তরতম কি তবে! আমারই তম তমের অাধার কি। মন মিঠানিমের আড়ালে আড়ালে আমি কে। কেন জল জলের ধর্ম নিয়ে এতো নিশি ডাকে। কেন সুর সুরের বাহিকা হয় একটি ভাঙা পাপড়ির তলে বিজন হৃৎ। বলো ঢেউ কেউ কেন কবিতা লেখে কেন কেউ... লিখে যায় অযুত নিযুত ভাঙা শিখাটির আলোগাথা...
৩.
টুপ শব্দে যে চলার আধার, তার মনকুড়ানি দিনগুলোতে আবার আমাদের দেখা হোক হে প্রাচীন
দূরের ঝাপসা। আমি তো গানেই গলে যাই, শ্রাবণে শীর্ণ হই। যখন পূর্ণতাঅঞ্চলে আমার কোন
পদছাপই পড়লো না, তবে এই অপূর্ণ নুড়িরেখায় যে কুড়িগ্রাম তার অশত্থের নীচে এসো আমরা বসি।
এই শ্যামল অবশেষ প্রহরে। সহোদর লাইনের ফাঁকে ফাঁকে যে বেদন, ধ্বনি পেল না
সেই কথা বলো আজ হে অবসিত
বলো প্রাণ এতো কেন শাণিত উথাল
বলো মন আজো কেন মনের মেরুপাখি !
৪.
শাল তো ছিলই। আর ছিল অাঁধার উটকো লোকজন। যারা কিছু বোঝার আগেই এসে বসতো ঋতুজলসিক্ত ধারায়। আর গ্লাসে গ্লাসে বাড়িয়ে দিতো সন্ধ্যার শিরিষে মোড়া মজুরি। যেন এক আনন্দপাঠে ভ'রে যেতো অন্ত পাঠশালা। ঝিরিঝিরি বাণীর মাদলে মহুলে কে যে কার অধিক সখা, কে যে কার স্বল্প বর্ণচোরা, বোঝাই দায়। যেন বোঝাটি কেউ হাতে নিয়ে চাকতির মতো ছুঁড়ে দিত আকাশে। ওই দেখ্ হুই দেখ কি গোল চাঁদ উঠেছে আজ গগনে.... কি যে লগন বয়ে যেতো...ফকিরির বরষণ দিনে
৫.
সেতু কই ! শুধু জোড়ার ধারণায় ভাষার গঠন এতো যুক্তিশীল হয়ে পড়ে আছে যে, ফুল যে আহতফুল, অন্তরায় তার ব্যথা কেউ বুঝলোই না! শুধু সমে এসে শান্তিটুকু খোঁজার ছলে, চিৎছায়া পাথরে প্রণাম রেখে যায় লোকে। ভাবে এই তো ঈশ্বর! এই এই পরমার্থ সকল। শুধু অস্তিগুঞ্জনে ঝিঁঝির ঝিঁঞ্ঝন ঝরে যায়। জোনাকিও আর বিস্ময় নয়, বিস্মরণের মুঠো বালি সারাদিন ঝরে...বোধের পারদে ঝরে সকল উৎস
আহা মক্শো নেমে আসো ধরাতলে!
৬.
বলো প্রান্তর । তোমার প্রান্তে প্রান্তে যে বনরেখা। তার তুতো উদাসটি কেন সতত নিসর্গ হয়। বলো মন দ্বিধার দোদুল ছেড়ে বলো কে সঙ্গে ছিল ওই ছায়াবনপথে। কেন সাদা পাতার বিক্ষোভ বহন করো রোজ। ঐক্য কি একলার গান! যা জোনাকি সঞ্জাত আলোবিন্দু,যা অস্তিত্বের থেঁতো হলুদবর্ণ, যা মর্ম ও মেথির লীনবোনা সান্ধ্যাতাঁত, বলো তাই কি কবিতা! বলো কবিতা এই হৃৎআঁচড়ের সব দাগই কি তুমি! তোমার গর্ভাধান কেন এতো চুপমোচড় ধরে রেখেছে অন্দরে। অন্তরের আগল খুলে কে তোমার সঙ্গেী হয় বলো প্রাণ!
৭.
সান্ধ্যমাতা! এ ছলনা ছলাৎ অভিধানে তুমিই নিয়ে এসেছো আর পথিকে মুড়ে ছেড়ে দিয়েছো চরাচরে। সেই থেকে মর্মকে মেথি কথ্যে লিখে যাচ্ছি চল বিচ্ছিন্ন পংক্তিমালা। অথচ তুমি তো সংযোগসেতু, সন্ধিসংগীত! দিবস ও রাতের একাত্মে তোমারই ধ্বনিত সুর নির্যাস হওয়ার কথা ছিল লিখিত সর-এ। তবু দূর কেন যে দূরের মর্মর ঝাপসা করে আমাকে প্রতিবার। নিয়ত নিয়তি খুকুর অলক্ষ্য আদর করে রাখে! ভাবতে ভাবতে তোমারই আবর্ত দারু গ্রহণ করি জন্মনাভির জখম গুনে গুনে...
Review Comments
সোসাল মিডিয়া কামেন্টস