কবিতা



অঞ্জন কাঞ্জিলাল




১।



মনের ঠিক মধ্যিখানে হয় প্রেম -

নয় চূড়ান্ত বিচ্ছেদ, কিছু তো একটা হতেই হবে।

দুগালে টুপিয়ে পড়া জল-

অথবা হঠাৎ শান্ত কোলাহল!

মুখের বাইরে ভিজিয়ে দেওয়া ঠোঁট ,

নয় জীবনের ওলটপালট-

কিছু তো একটা হতেই হবে,

তবেই জেনো নতুন কবিতা জন্ম নেবে ।



২।



সব ভুলেছি তোমায় ছাড়া, উপায় নেই।

স্বপ্ন গুলো হারিয়ে গেল ভাবনাতেই।

ভীড় বাসেতে উঠতে এখন ভয় লাগে,

ব্যস্ত সবাই, কে পালাবে কার আগে!

মধ্যরাতে তোমার জন্য কান্না পায়।

ভালোবাসার মানুষগুলো কলকাতায়।



৩।



চোখ বুঝে নিক চোখের ভাষা

আঙুল বুঝুক হাতের মন।

কোথাও কারো হৃদয় ভাঙে

কেউ কেঁদে নেয় কিছুক্ষণ।



৪।



আজকে রাতের অন্ধকারে

গান থামালো মাঝি।

 শান্ত নদী, সুর তুলে কয়-

বাসলে ভালো বুঝি?

আমার চোখে হেমন্ত রাত

আমার চোখে নীল।

তোমার বুকের দুমুখে ঢেউ-

তোমার ঘরে খিল।

 আমার হাতে তোমার আঁচল,

তোমার হাতে বই।

সেই বইতেও রবীন্দ্রনাথ

আমার কথা নেই!



৫।



এ এক রক্তাক্ত পথ।

যে পথে শিল্প এঁকে বেঁকে চলে।

এ এক শব্দদূষণ।

যেখানে হাসির হাহাকার শোনা যায়।

তুমি যদি শুধু পয়সা চাও

তোমার পথ ও শপথ দুটোই খোলা।

যদি হাততালি চাও।

তবে তুমি মূর্খ, তুমি তালিবান।

তোমার হরস্কোপ প্রত্যেকের ডিনার টেবিলে।



৬।



থাক না তোমার ভালবাসার কথা।

আকাশ এখন মেঘেতে ভরপুর,

এসো না কাল সকাল হবার আগে-

গামছা পরে কাটুক রাতদুপুর।

হয়তো তোমার বুকের কাছেই মন।

আটপৌরে আমার আউটডোর।

কাঁদার জন্যে পুরোটা ডিসকাউন্ট ...

গভীর রাতে গ্যারেজে রাখা ভোর।



৭।



যদি যত্ন করে মুঠোয় ধরো, তবে -

থেকেও যেতে পারি সমান্তরাল।

যদি আবেগ আঁচড়ে নখ বসিয়ে দাও,

লজ্জাবতি হতেও পারি কাল।

ভেজা গলার শব্দ আকাশ গোনে,

শরীর খোঁজে নরম কোলাহল।

তোমার সুরে সুর মেলাতে গিয়ে-

আমার ঘরে বাড়ন্ত হয় চাল।

একটা সময় শুধুই তুমি আমি

একটা সময় - মধ্যে ওরা কারা!

তোমার মাঝে হাজার তুমি এখন,

শিরার বুকে নাচছে উপশিরা।



৮।



জানিনা কে তুমি

ব্যস্ততায় খোলোনি দেরাজ।

অন্ধকারে ছায়াও পালিয়ে যায়।

কেউ ছাড়ে নিজের সমাজ।



জানিনা কে তুমি!

মধ্যরাতে রেস্তরাঁয় ডুবি।

ফেলে গেছ টুকিটাকি ভুলে,

 সেগুলোই তো আমার ভাবি।



৯।



হয়ত কখনো ঘন নীরবতা ফাঁকে

নয়ত সহজ চেনা অচেনার ছকে।

চেয়েছি বোধহয় শরীরে শরৎ এলে,

কিম্বা ভেবেছি ঘুমঘোরে চলে গেলে!

জানিনা একেই ভালবাসা বলে কিনা -

আঙুলে সেতার, বুকে মালকোষ দুচোখে  হাসনুহানা।



১০।



তোমার পিঠেতে নয়খানা কালো তিল -

তোমার জানার কথাও সেটা নয়।

কালোর কালিমা ছোট্ট বিন্দু গুলো,

তোমাকে করেছে উদ্ধত,নির্ভয়।

আমার দৃষ্টি আনমনে অগোচরে,

কলঙ্ক নয় কালো জুপিটার খোঁজে!

কারণ তুমি যে দেখোনি  পিছন ফিরে-

কত কিছু পড়ে কালো রাত্রির ভাঁজে।



১১।



আমি অপেক্ষা করছিলাম

কত রাত কত দুপুরে

তোকেই ভোরবেলা দেখব বলে!

লোকে পাগল বলে গালাগাল দিল,

কেউ কেড়ে নিল মুখের খাবার ...

আমি আত্মজ যন্ত্রণায় চিৎকার করে বললাম-

শালা ভালবেসেছিলাম।

বুদ্ধিজীবী রা বুঝলই না!



১২।



একটা দিন ছিল

জীবন জাপটে ধরেছিল

দম আটকে আসতো...

                      তারপর

ছাড়াতে না পেরে

আমি জড়িয়ে ধরলাম

জীবনকে,

এখন উষ্ণতা পাই

কাচের গ্লাস আর কলাপাতায়-

বেশ ভালোবাসাবাসি হয়ে গেছে -

 অচ্ছুত জীবনের সাথে।



১৩।



আসলে,

যার হাত ধরেছি, তার

অন্য হাতটা অন্য কারোর

অনেক দাবিদার -



নিজের দুহাত জড়িয়ে

তাকে মরি,

প্রাণের ভাষায় অনন্তরাগ

হল না জড়াজড়ি।



১৪।



কতদিন হল কবিতা আসেনি বুকে।

কত যুগ হল প্রাণহীন সহবাস !

খেয়া পারাপারে লাভ লোকসান ঢুকে-

কেটে যায় বেলা, সপ্তাহে বারোমাস।