তুঙ্গ তোমার ধবলশৃঙ্গশিরে


উদাসীন শীত, যেতে চাও বুঝি ফিরে?


চিন্তা কি নাই সঁপিতে রাজ্যভার


নবীনের হাতে, চপল চিত্ত যার।


হেলায় যে-জন ফেলায় সকল তার


অমিত দানের বেগে?


দণ্ড তোমার তার হাতে বেণু হবে,


প্রতাপের দাপ মিলাবে গানের রবে,


শাসন ভুলিয়া মিলনের উৎসবে


জাগাবে, রহিবে জেগে।


সে যে মুছে দিবে তোমার আঘাতচিহ্ন,


কঠোর বাঁধন করিবে ছিন্ন ছিন্ন।


এতদিন তুমি বনের মজ্জামাঝে


বন্দী রেখেছ যৌবনে কোন্‌ কাজে,


ছাড়া পেয়ে আজ কত অপরূপ সাজে


বাহিরিবে ফুলে দলে।


তব আসনের সম্মুখে যার বাণী


আবদ্ধ ছিল বহুকাল ভয় মানি’


কণ্ঠ তাহার বাতাসেরে দিবে হানি’


বিচিত্র কোলাহলে।


তোমার নিয়মে বিবর্ণ ছিল সজ্জা,


নগ্ন তরুর শাখা পেত তাই লজ্জা।


তাহার আদেশে আজি নিখিলের বেশে


নীল পীত রাঙা নানা রঙ ফিরে এসে,


আকাশের আঁখি ডুবাইবে রসাবেশে


জাগাইবে মত্ততা।


সম্পদ তুমি যার যত নিলে হরি’


তার বহুগুণ ও যে দিতে চায় ভরি,


পল্লবে যার ক্ষতি ঘটেছিল ঝরি,


ফুল পাবে সেই লতা।


ক্ষয়ের দুঃখে দীক্ষা যাহারে দিলে,


সব দিকে যার বাহুল্য ঘুচাইলে,


প্রাচুর্যে তারি হল আজি অধিকার।


দক্ষিণবায়ু এই বলে বার বার,


বাঁধন-সিদ্ধ যে-জন তাহারি দ্বার


খুলিবে সকলখানে।


কঠিন করিয়া রচিলে পত্রখানি


রসভারে তাই হবে না তাহার হানি,


লুঠি লও ধন, মনে মনে এই জানি,


দৈন্য পুরিবে দানে।