দুটি কবিতা

 


 তুমি


 প্রচলিত একটি বারান্দায় দাঁড়াইয়া

 তোমাকে আজও ডাকিতেছি—

 কত তোমার নাম, কত তোমার রূপ

 কত তোমার ছলনার রূপান্তর

 দেখিতে দেখিতে আমি বিভ্রান্ত


 আজও আমি সংসারী হইতে পারিলাম না

 আজও আমি পশ্চাৎ ফিরিয়া দেখিতেছি


 জীবনের এই সরণিতে ছায়া পড়িতেছে

 স্বপ্নের ইমারতের ইঁট খশিতেছে

 বিবর্ণ জানালা-দরজা যৌবন হারাইছে


 কাহার সহিত কথা কহিব?

 তোমার হলুদ বরণ শাড়ি গোলাপি হইল

 তোমার নীলবর্ণ আকাশে রক্তবর্ণ আলো ফুটিল

 মসৃণ ত্বকে শরৎকালের স্পর্শ জাগিল

 মনের সমুদ্রে ঢেউ উঠিল


 আমি সব বুঝিতে পারিলাম

 কিন্তু সবকিছুই না বুঝিতে পারার বোধ লইয়া

 আজও একাকী চাহিয়া রহিলাম


 তুমি দেখিয়াও দেখিলে না

 তুমি আসিয়াও আসিলে না

 তুমি সর্বনামের ভিতর সর্বনাম হইয়া মিলাইয়া গেলে


 


কতদূর হেঁটে যাচ্ছ তুমি 



এখনও তো চেরা দাগ বুকে 

যে রক্তে সিঁদুর এঁকে দিয়েছি সিঁথিতে 

এখনও রাত জেগে বসে আছি 

আমার স্মৃতির বারান্দাতে 


কতদূর হেঁটে যাচ্ছ তুমি 

আরও দূর চলে যাবে 

যার কোনও ইতিহাস হবে নাকো লেখা 

যেখানে সবাই মৃত, ঝরে পড়ে পাতা 


নিঃস্ব করতলে আলো ফোটে নাকো আর 

হলুদ বিকেলের চা আসে 

কেঁপে ওঠে হাত 

যদিও কোকিল ডাকে, বুঝি নাকো ভাষা 


হরিণ-হরিণী সব গভীর বনের দিকে যায় 

ফিকে চাঁদ কোলে নিয়ে রাত্রির আকাশ 

আমাকে কত তার গল্প শোনায় 

গল্পের কাছে বসে থাকি, নিঃশব্দে রাত পার হয়